তালতলী প্রতিনিধি : ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে অভিযান-১০ লঞ্চে,অগ্নিকান্ডের ঘটনায় বরগুনার তালতলী উপজেলার নিশানবাড়ীয়া ইউনিয়নের আগাপাড়া গ্রামের আব্দুল আজিজের জীর্ণশীর্ণ ঝুপড়ি ঘরে দুই যমজ নাতনীর লাশের পরে এবার এলো মেয়ে সিমু আক্তারের লাশ।
বুধবার (২৯ ডিসেম্বর) সকালে নদী থেকে লাশটি উদ্ধার করে তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেন ঝালকাঠি জেলা প্রশাসন। সিমুর ভাই হান্নান নিজে গিয়ে তার বোনের লাশ সনাক্ত করেন।
বৃহস্পতিবার (৩০ ডিসেম্বর) ভোর রাতে যমজ দিুই মেয়ে লামিয়া-সামিয়ার কবরের পাশেই তার মা সিমুর মরদেহ দাফন করা হয়েছে। প্রতিবেশিদের যাওয়া আসা থাকলেও বাড়িতে নেই কান্নার কোনো শব্দ। এলাকার লোকজন জানান, যেহেতু লাশটি অর্ধগলিত তাই ভোররাতেই দাফন সম্পন্ন করা হয়েছে।
সিমুর বাবা আব্দুল আজিজ হু-হু করে কেঁদে উঠে বলেন, মোর নাতীর (নাতনী) লাশ লইয়া আইছেন কয়দিন আগে। আইজগো আইছেন মোর মাইয়ার লাশটা নিয়া। বউ হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন। এ কেমন বিচার করলো আল্লাহ্। মুই কি ভুল হরছি আল্লাহ্’র ধারে যে হেই ভুলের এতো বড় শাস্তি দিলো মোরে। এহন মাইয়াডার মরা মুখটি খুলে দেন আমার মুখটি শেষবারের মতোই দেখলাম।
তিনি আরও বলেন, আম্মেরা কেম্মে বোঝবেন যে নিজ হাতে দুই নাতনী ও মাইয়ার লাশ কবরে থোয়া কিযে যন্ত্রনার। মাইডার লাশ সামনে রাইখা কানতেও পারি না। এইটু কথা বলেই তিনি জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন।
সিমুর ভাই হান্নান বলেন, প্রতিদিনই বোনের লাশের খোঁজখবর নিতে ঝালকাঠি সেই ঘটনাস্থলে যাই। বুধবার জানতে পারি দুই মহিলার লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এমন সংবাদ পেয়ে ছুটে যাই গিয়ে দেখি আমার বোনের লাশটি পড়ে আছে মাটিতে। জেলা প্রশাসনের কাছে বোনের সকল তথ্য দিয়ে আমার বোনের লাশ নিয়ে বাড়িতে আসি।
তালতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. কাওসার হোসেন বলেন, নিহতদের পরিবারকে দাফনের জন্য ২৫ হাজার টাকা করে দেওয়া হয়েছে। আর যেহেতু আব্দুল আজিজ জীর্ণশীর্ণ ঘরে বসবাস করছে তাকে একটি ঘর দেওয়া হবে।
Leave a Reply