লোকবেতার ডেস্ক : বরগুনার তালতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসারের অনুমতি ও টেন্ডার না দিয়েই উপজেলার দক্ষিণ ঝাড়াখালী ছালেহিয়া দাখিল মাদরাসার একটি পুরাতন ভবন বিক্রি করে টাকা আত্মসাতের অভিযোগ পাওয়া গেছে মাদরাসার সুপারিনটেনডেন্ট (ভারপ্রাপ্ত) মাওলানা আব্দুল জব্বার ও সভাপতি সাবেক সুপারিনটেনডেন্ট মাওলানা আব্দুল মতিনের বিরুদ্ধে।
মাদরাসার ইবতেদায়ি শাখার ক্বারি নুরুল আমিন মার্চ মাসে তালতলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর পুরাতন ভবন বিক্রি করে টাকা আত্মসাতের অভিযোগ দেন। তার আবেদনের প্রেক্ষিতে নির্বাহী কর্মকর্তা উপজেলা তথ্য কর্মকর্তা সঙ্গীতা রাণীকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন।
লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, গত বছর উপজেলার দক্ষিণ ঝাড়াখালী ছালেহিয়া দাখিল মাদরাসায় সরকারিভাবে একটি নতুন ভবন বরাদ্দ পায়।
সে বছর মার্চ মাসে ঠিকাদার কর্তৃক ভবন নির্মাণ করতে পূর্বের পুরাতন ভবনটি ভেঙে ফেলতে হবে। নিয়ম অনুযায়ী ভবন ভাঙার পূর্বে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও শিক্ষা অফিসারের অনুমতি এবং টেন্ডারের মাধ্যমে বিক্রি করতে হবে। কিন্তু মাদরাসার সুপার ও সভাপতি নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করেই গোপনে পুরাতন ভবনটি ভেঙে বিক্রি করে টাকা আত্মসাৎ করেন।
পূর্বের ভবনটি দৈর্ঘ্য ৮৫ ফুট প্রস্থ প্রায় ১৮ ফুট টিনশেড একতলা বিল্ডিং, যার বর্তমান আনুমানিক মূল্য প্রায় ২০ লাখ টাকা। ভবনটি কোনো রকমের টেন্ডার না দিয়েই গোপনে বিক্রি করে দেন মাদরাসার ভারপ্রাপ্ত সুপার মাওলানা আব্দুল জব্বার ও সাবেক সুপার বর্তমান মাদরাসার সভাপতি মাওলানা আব্দুল মতিন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন শিক্ষকের সাথে আলাপ করলে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। এ ছাড়া তিনি গোপনে ভুয়া রেজুলেশন বানিয়ে শিক্ষকদের স্বাক্ষর জাল করে প্রতারণা করেন বলে শিক্ষকরা অভিযোগ করেন।
অভিযোগকারী শিক্ষক ক্বারি নুরুল আমিন বলেন, টেন্ডার ছাড়া অধিকাংশ শিক্ষককে না জানিয়ে তাদের পছন্দের কিছু শিক্ষক নিয়ে করোনাকালীন বন্ধে মাদরাসার সাবেক সুপার, বর্তমান সভাপতি ও মাদরাসার বর্তমান সুপার (ভারপ্রাপ্ত) গোপনে মাদরাসার মালামাল স্থানীয়দের কাছে বিক্রি করে মোটা টাকা আত্মসাৎ করেছেন।
মাদরাসাসংলগ্ন বাড়ির মো. মোস্তফা ও মো. মোর্তজা বলেন, মাদরাসার পূর্বের একটি একতলা বিল্ডিং ছিল, যা ভারপ্রাপ্ত সুপার আ. জব্বার ও সভাপতি সাবেক সুপার মাও. আ. মতিন ভেঙে প্রায় ৩০ হাজার ইট, টিন, কাঠ ও দরজা-জানালা বিক্রি করে টাকা আত্মসাৎ করেছেন।
এ বিষয়ে মাদরাসার ভারপ্রাপ্ত সুপার আব্দুল জব্বারের কাছে মুঠোফোনে জানতে চাইলে তিনি অসংলগ্ন কথাবার্তা বলেন। একবার বলেন, ‘উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছ থেকে মৌখিক অনুমতি নিয়ে বিক্রি করেছি। ‘ আবার বলেন, ‘ঠিকাদার রাতের আঁধারে ভেঙে ফেলেছেন তা আমি জানি না। ‘ আবার কখনো বলেন, তিনি ভবনটি ভাঙেননি।
মাদরাসার সাবেক সুপার বর্তমান সভাপতি ভবন ভেঙে তা বিক্রি করে টাকা আত্মসাৎ করার বিষয় অস্বীকার করে বলেন, মাদরাসা পরিচালনা কমিটির রেজুলেশনের মাধ্যমে ভবনটি ভেঙে ফেলা হয়েছে।
জানতে চাইলে তালতলী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা লুৎফুল কবির মো. কামরুল হাসান বলেন, টেন্ডার ছাড়া ভবন ভাঙা মালামাল বিক্রি করা যাবে না। যারা গোপনে ভবন ভেঙে বিক্রি করেছেন তদন্ত করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. কাওসছার হোসেন বলেন, ‘একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি এবং তথ্য কর্মকর্তাকে তদন্তভার দেওয়া হয়েছে। অভিযোগের সত্যতা পেলে এ বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ‘
Leave a Reply